মোঃ শহিদুল ইসলাম রনি: স্ট্যাফ রিপোর্টার:
বগুরা জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় দেশী মুরগী পালনে সাবলম্বী হচ্ছেন এলডিডিপি প্রকল্পের পিজির নারী সদস্যরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বাস্তব্যয়নে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শিবগঞ্জ উপজেলায় দেশী মুরগী পিজি নারী সদস্যের ১৫১ জনের মাঝে প্রয়োজনীয় দেশী মুরগী পালনের প্রশিক্ষণ দিযে অনুদান হিসেবে ১টি করে পরিবেশবান্ধব দেশী মুরগী ঘর করে দেওয়া হয়। এরমধ্যে কানসাট ইউনিয়নের মোহনবাগ দেশী মুরগী পিজির ৩৮ জন শাহাবাজপুর ইউনিয়নের ধোবড়া দেশী মুরগী পিজির ৪০জন, নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের নয়ালাভাঙ্গা দেশী মুরগী পিজি ৪০ জন এবং দুর্লভপুর ইউনিয়নের দুর্লভপুর দেশী মুরগী পিজির ৩৩ জন। আর এতে করেই ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে শুরু করে এল ডি ডি পি প্রকল্পের পিজির নারী সদস্যরা।
সরজমিন প্রকল্প এলাকায পরিদর্শন গিয়ে দেখা যায় উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের মোহনবাগ দেশী মুরগী পিজির সদস্য মনিরুল ইসলামের স্ত্রী মোসাঃ মোস্তারী বেগম বলেন, “আগে বাড়িতে দেশী মুরগী পালন করতাম কিন্তু অসুখ বিসুখে মুরগী মারা গিয়ে লাভবান হতে পারতাম না। এল ডি ডি পি প্রকল্পের আওতায় দেশী মুরগী পিজির সদস্য হয়ে সরকার থেকে দেশী মুরগী পালনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও একটি পরিবেশবান্ধব মুরগির ঘর পেয়ে দেশী মুরগী পালন শুরু করি। এখন আমার ৫০টি দেশি মুরগী রযেছে গড়ে প্রতিদিন ১৫টি করে ডিম পাই। কিছু বিক্রি করে ছেলে মেযেদের স্কুলের ভরন -পোষন বহন করি এবং পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মিটে। ৫ জন সদস্যের সংসার নিয়ে আমার স্বামী যখন সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছিলো তখন দেশী মুরগী পালন করেই সংসারের হাল ধরেছি এখন আমি সাবলম্বী।”
এল ডি ডি পি প্রকল্পের, উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের দুর্লভপুর দেশী মুরগী পিজির আরেক নারী সদস্য বাবুল হোসেনের স্ত্রী মোসাঃ সেলিনা বেগম বলেন, “সরকার থেকে আমাকে দেশী মুরগী পালনের প্রশিক্ষণ ও মুরগী পালনের জন্য একটি ঘর দিয়েছে। দেশী মুরগী পালন করে লাভবান হয়েছি। আমার খামারে ৪০টি দেশী মুরগী রয়েছে। প্রতিদিন ১৩-১৭ ডিম পাই। পরিবারের আমিষ ও পুষ্টি চাহিদা পুরণ করে দৈনিক ১০টি ডিম বাজারে বিক্রয় করে ২০০ টাকা উপার্জন হয়। স্বামীর উপর নির্ভর না করে আমি আমার স্কুল পড়ুয়া দুই মেয়েকে অর্থ দিতে পারি। আমি দেশী মুরগী পালন করে স্বাবলম্বী”। একই সুরে কথা বলেন এল ডি ডি পি প্রকল্পভুক্ত পিজি র অন্যন্য সদস্যরা। তবে নয়ালাভাঙ্গা ইউনিয়নের পিজির নারী সদস্য শারমিন খাতুন বলেন যদি সরকার থেকে আমাদের দেশী মুরগীর বাচ্চা অনুদান হিসেবে সরবরাহ করা হয় তাহলে আমরা আরো আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবো।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ শাহাদৎ হোসেন বলেন, “বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের বাস্তব্যয়নে এল ডি ডি পি প্রকল্পের আওতায় উপজেলায় দেশী মুরগী পিজির ১৫১ জন নারী সদস্যেকে অনুদান হিসেবে ১টি করে পরিবেশবান্ধব দেশী মুরগী ঘরের জন্য অর্থায়ন করা হয়। মুরগী পালনের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করি। সদস্যের পাশাপাশি অন্য মহিলারাও দেশী মুরগী পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। সরকারের লক্ষ্য সামাজিক, অর্থনৈতিক, আমিষ ও পুষ্টি চাহিদা সম্পূর্ণ দেশ গড়া। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।সদস্যের কিছু বাড়তি চাহিদা রয়েছে যা উদ্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হবে”।