নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার অন্তর্গত সিংরইল ও মাধবপুর মোজায় প্রায় ১৮ বিঘা জমি শিবগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মোঃ আজিজুর রহমান সহ মিথ্যা মামলায় উল্লেখিত ব্যক্তিগণ জমি ক্রয় করে ৪০ বছর ধরে ভোগ দখল করে আসছে।
২০২০ সালে হঠাৎ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ হারুনুর রশিদের বোন মমতাজ মহল বেগম সাং- দাদনচক, থানা: শিবগঞ্জ, জেলা: চাঁপাইনবাবগঞ্জ দাবি করেন যে, উক্ত জমিগুলো ১৯৭২ সালে জমির মালিক গলেনুর বেগম আমার ফুফু আমাকে হেবা করে দিয়েছে।
উক্ত জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধ তৈরি হলে বর্তমানে ভোগ দখলে থাকা জমির মালিকগণ ২৫/১০/২০২০ইং তারিখে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর নাচোল দেওয়ানী আদালতে মালিকানা স্বত্বের মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি চলমান এবং প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
মিথ্যা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে দেওয়ানী মামলার বাদীরা বলেন মালিকানা দাবীকারী মমতাজ বেগম দেওয়ানী মামলায় নিশ্চিত হেরে যাবে ভেবেই গত ২০২৩ইং সালের ডিসেম্বর মাসে নাচোল থানা পুলিশের সহায়তায় জমির ধান উঠানোর চেষ্টা করেন এবং গণমাধ্যমের তৎপরতায় ব্যর্থ হন।
এ ঘটনার প্রায় ৩ মাস পর মালিকানা দাবীকারীর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা জমিতে লাগানো পেঁয়াজ চুরি করে রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে যায়। পিঁয়াজ চুরির বিষয়ে ভুক্তভোগী জনাব মোঃ আজিজুর রহমান নাচোল থানায় ১৪/০৩/২০২৪ ইং তারিখে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়ের করার পর ১৬/০৩/২০২৪ইং তারিখে আবারও জমির মালিকানা দাবীকারীর ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এবং ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক জমিতে থাকা গম কেটে নিয়ে যায়। এই ঘটনা নিয়ে ১৭/০৩/২০২৪ ইং তারিখে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার অনলাইনে এবং ১৮/০৩/২০২৪ইং তারিখের প্রিন্ট পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রচারিত হয়।
গম কাটা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ১৮/০৩/২০২৪ তারিখে সন্ত্রাসী ১। মোঃ জিলানী, সাং-গুপ্ত মানিক, ২। মোঃ জহুরুল ইসলাম, সাং- মহেশপুর, ৩। মোঃ হুয়াল মেম্বার, সাং- রানী নগর, ৪। আব্দুর রাজ্জাক, সাং-ব্রাহ্মণ গ্রাম, ৫। সিফাত, সাং- ব্রাহ্মণ গ্রাম, ৬। মোঃ মোস্তফা, সাং- গুপ্ত মানিক ৭। জহুরুল ইসলাম, সাং-মহেশপুর, ৮। মোঃ জব্বার, সাং-গুপ্ত মানিক ৯। এম আলী, সাং- রানীনগর ১০। বুলু, সাং- গুপ্ত মানিক, ১১। মোঃ আব্দুল বারী, সাং- টাকাহারা ১২। মোঃ বাদল, সাং- টাকাহারা এবং অজ্ঞাত আরাও ১৫/২০ জনের নামে নাচোল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ যথারীতি মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এবং উক্ত ব্যক্তিগণ সবাই চার্জশিট ভুক্ত আসামি।
মামলা দায়ের হবার পরেও গত ২০/০৪/২০২৪ ইং তারিখে আবারও ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা জমি দখলের চেষ্টা করলে ২০/০৪/২০২৪ইং তারিখে এ নিয়ে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার অনলাইনে এবং ২১/০৪/২০২৪ইং তারিখের প্রিন্ট পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন প্রচার করা হয়। এতে করে পত্রিকাটির প্রতিবেদকের উপর আসামিগন চরম ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
মালিকানা দাবি করা ব্যক্তি ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী সংবাদ প্রচারকারী সাংবাদিক এবং প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে গত ১৬/০৭/২০২৪ইং তারিখে দেশীয় অস্ত্র ভয়-ভীতি প্রদর্শন, প্রাণনাশের হুমকি এবং ২০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে ১৮/০৩/২০২৪ ইং তারিখের জিআর মামলার বাদি সহ দেওয়ানী মামলার সাক্ষীদের এবং দেওয়ানী মামলার অন্যান্য পক্ষগণকে আসামি করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতে মিথ্যা মামলাটি দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নাচোল থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। বর্তমানে নাচোল থানার এসআই শাহরিয়ার পারভেজ মামলাটি তদন্ত করছেন।
গুরুতর অভিযোগের পরেও কেন থানায় মামলা না দিয়ে আদালতে মামলা করা হলো সে বিষয়ে তথাকথিত বাদী জনাব সাইদুর রহমানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ যাবৎ ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনাগুলি বিশ্লেষণ করলে দুটি বিষয় পাওয়া যায়, একটি হল- মিথ্যা ও হয়রানি মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে দেওয়ানি মামলার কার্যক্রম থেকে দূরে রাখা যাতে করে মামলাটি আরও বিলম্বিত হয় এবং বাদীর অনুপস্থিতিতে মামলাটিকে প্রভাবিত করে নিজেদের পক্ষে রায় নেওয়া।
অপরটি হলো- দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার সাংবাদিককে সংবাদ প্রচার করা থেকে বিরত রাখা এবং এ দেখে যাতে কেউ আর কখনও এ নিয়ে সংবাদ প্রচার না করে সেই ধরনের একটি ম্যাসেজ সাংবাদিকদের মধ্যে প্রচার করা। সাংবাদিকের উপর এহেন মিথ্যে মামলা স্বাধীন দেশের স্বাধীন গণমাধ্যমের উপর হুমকি স্বরূপ।
উল্লেখ্য যে, মিথ্যা মামলার বাদী মোহাঃ সাইদুর রহমান, সাং- চর মোহনপুর, থানা : চাপাইনবাবগঞ্জ সদর, জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর কোন দিনই মামলায় উল্লেখিত জমির উপর কখনও কোন ফসল চাষাবাদ করেননি, যারা জমির প্রকৃত মালিক তারাই বর্তমানেও ভোগ দখলে আছেন এবং জমিতে বর্তমানে ধান লাগানো রয়েছে। নিজেদের ৬৯.৪৬ শতক জমি, যার বাজার মূল্য সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা হবে। ১০ লক্ষ টাকার জমিতে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি সহ উল্লেখিত অপরাধ কেউ কখনও করবেন না।
মামলাটিতে যে ৪ জন সাক্ষী দেখানো হয়েছে তাদের একজন মালিকানা দাবিকারী মমতাজ মহল বেগম এবং ২ জন ১৮/০৩/২০২৪ইং তারিখের জিআর মামলার চার্জশিট ভুক্ত আসামি জিলানী এবং হুয়াল মেম্বার। মামলার সাক্ষী ৪ জনেরই বাড়ি শিবগঞ্জ উপজেলায়। ঘটনাটি নাচোল উপজেলায় হলেও ঘটনা স্থলের কোন সাক্ষী মামলার নথিতে উল্লেখ নাই।
মামলার তদন্ত নিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহরিয়ার পারভেজের কাছে তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান মামলাটি বিজ্ঞ আদালত থেকে ২৪/০৭/২০২৪ইং তারিখে থানায় এসেছে এবং আমি সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে তদন্ত করে প্রকৃত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করব।