নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানাকে ম্যানেজ করে চলছে আসামিদের জমি দখলের মহা উৎসব।
নাচোল থানার অন্তর্গত সিংরোইল এবং মাধবপুর মৌজায় শিবগঞ্জ থানার বাসিন্দা মোহা: আজিজুর রহমান এবং তার অংশীদারদের ৪০ বছর আগের ক্রয় কৃত ২২ বিঘা জমি, একই উপজেলার বাসিন্দা বিবাদী মমতাজ বেগম মালিকানা দাবি করলে সেটা নিয়ে বর্তমানে আদালতে মামলা চলমান আছে। কিন্তু হঠাৎ করে আসামিরা ১। মোঃ জিলানী সাং-গুপ্ত মানিক, ২। মোঃ জহুরুল ইসলাম, সাং- মহেশপুর, ৩। মোঃ হুয়াল মেম্বার, সাং- রানী নগর, ৪। আব্দুর রাজ্জাক সাং-ব্রাহ্মণ গ্রাম, ৫। সিফাত, সাং- ব্রাহ্মণ গ্রাম ৬। মোঃ মোস্তফা, সাং- গুপ্ত মানিক ৭। জহুরুল ইসলাম সাং-মহেশপুর, ৮। মোঃ জব্বার, সাং-গুপ্ত মানিক ৯। এম আলী, সাং- রানীনগর ১০। বুলু, সাং- গুপ্ত মানিক, ১১। মোঃ আব্দুল বারী, সাং- টাকাহারা ১২। মোঃ বাদল সাং- টাকাহারা, উক্ত জমি নিজেদের বলে দাবি করলেও দাবির বিপরীতে মালিকানার কোন কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উক্ত ব্যক্তিরা জেলার বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে জমি দখল করে থাকে। খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে এরা সবাই বিবাদী মমতাজ বেগমের ভাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোঃ হারুনুর রশিদের ভাড়াটিয়া লোক। আসামিরা নিজেদের দোষ ঢাকতে নিজেরাই জমির মালিকানা দাবি করে থাকে।
উক্ত ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনীরা গত ০৯/০৩/২০২৪ইং তারিখে রাতের অন্ধকারে বাদীর জমির পেঁয়াজ তুলে নিয়ে যায়। এ নিয়ে গত ১৪/০৩/২০২৪ ইং তারিখে থানায় অভিযোগ করতে গেলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেকুর রহমান বলেন জমিজামার মামলা আদালতের বিষয়। পরে জমির মালিক একটি গণমাধ্যম কর্মীর বাবা পরিচয় পেয়ে পেয়াজ চুরির অভিযোগটি আমলে নেন।
অভিযোগ দাখিলের পরের দিন (১৫/০৩/২০২৪ ইং) অভিযুক্তরা আবার গম চুরি করে নিয়ে যায়। ঐদিনই গমের সন্ধান পুলিশকে দিলেও গম উদ্ধার করতে নানা টাল বাহানা শুরু করেন। থানায় কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে অবশেষে সার্কেল এসপি জনাব রাকিবুল ইসলামকে ফোনে বিষয়টি বললে পুলিশ গম উদ্ধার না করে শুধুমাত্র ছবি তুলে চলে আসেন। যেখানে পুলিশের দায়িত্ব ছিল চুরির মাল উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কিন্তু তা না করাতে তারা আরও উৎসাহিত হয়ে ১৬/০৩/২০২৪ ইং তারিখে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাকি গম কাটার জন্য আসলে আবারও বিষয়টি পুলিশকে জানালে এসআই মুকুলকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে তাদের থানায় নিয়ে এসে শুধুমাত্র সতর্ক করে অভিযুক্তদের ছেড়ে দেন।
অভিযুক্তরা থানা থেকে বের হয়ে আবারও প্রকাশ্যে জমির গম কাটা শুরু করেন। আবারও পুলিশকে জানালে এসআই মুকুলের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে দর্শকের মতন দাঁড়িয়ে অভিযুক্তদের গম মাড়াই উপভোগ করে দায় সেরে চলে আসেন। এবারও অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করে তাদের উৎসাহিত করেন নাচোল থানা পুলিশ। সবকিছু দেখে মনে হল মুজিব শতবর্ষে পুলিশ হবে জনগণের একথা যেন কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে। পুলিশের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব হল জনগণের জান এবং মালের হেফাজত করা কিন্তু নাচোল থানা পুলিশ তা না করে অপরাধীদের আরও উৎসাহিত করেন।
অবশেষে ১৭/০৩/২০২৪ইং তারিখে দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ পত্রিকার অনলাইনে এবং ১৮/০৩/২০২৪ ইং তারিখের প্রিন্ট পত্রিকায় এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে তাড়াহুড়ো করে মামলা নিলেও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেকুর রহমান উত্তেজিত হন প্রতিবেদকের উপর। পেঁয়াজ ও গম চুরির মামলা হলেও প্রকাশ্যে গম লুটপাটের বিষয়টি মামলায় জায়গা পায়নি। বর্তমানে অভিযুক্ত আসামিরা সবাই জামিনে আছেন। যেহেতু প্রতিটি ক্ষেত্রে আসামিরা থানাকে ম্যানেজ করতে সক্ষম হচ্ছে তাই এবার তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আসামি হওয়া সত্ত্বেও ২০/০৪/২০২৪ইং তারিখে ট্রাক্টর দিয়ে হাল চাষ শুরু করেন। আবারও হাল চাষের বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারেকুর রহমানকে জানালেও তার কাছ থেকে কোন সহযোগিতা না পেয়ে আবারও বিষয়টি সার্কেল পুলিশ সুপারকে জানানো হলে তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও ঘটনা স্থলে কোন পুলিশ যায়নি। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মুকুলকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য বারবার ফোন দিলেও তিনি আসছি আসছি বলে শেষ পর্যন্ত তিনি ঘটনাস্থলে আসেননি। বিগত দিনে পুলিশের ভুমিকা এবং আজকের পুলিশের ভূমিকা প্রমাণ করে পুলিশকে ম্যানেজ করে আসামিরা উৎসাহিত হয়ে বাঁদির জমি জোরপূর্বক দখল করে হাল চাষ করেছেন।
এই ঘটনার পূর্বে নাচোল থানা পুলিশের ভূমিকা এবং আসামিদের জীবন বৃত্তান্ত সহ আরও খবর দেখার জন্য চোখ রাখুন (অনলাইন ও প্রিন্ট পত্রিকায়) দ্বিতীয় পর্বে——–।