মোঃ আতিকুর রহমান আতিক, রাজশাহী:
রাজশাহীতে জালিয়াতি করে ওয়ারিশি সম্পত্তি হাতিয়েও নেওয়া চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় রাসিক ১৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর টুটুল ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ বিষয়ে সুজাউদ্দৌলা নামে এক ব্যক্তি চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেন। এর প্রতিবাদে সম্পত্তির প্রকৃত ওয়ারিশগণ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্পত্তির ওয়ারিশ আবুল হোসেনের ছেলে মোজ্জামেল হক বাক্কার। সংবাদ সম্মেলনে সকল ওয়ারিশগণসহ আরও উপস্থিত ছিলেন বয়েন ওরফে মায়নুদ্দীনের ছেলে টুটুল ও শাহনাজ বেগম।
২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১ টায় রাজশাহী মহানগরীর তেরখাদিয়া ডাবতলায় উক্ত জমির উপর সংবাদ সম্মেলন করা হয় ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএনপি পন্থী ১৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর টুটুল বলেন, তেরখাদিয়া মৌজার ১৫৬ নং খতিয়ান আর এস ১নং দাগের .৩৭ একর সম্পত্তি মকবুল মন্ডল, ময়েন উদ্দিন ও সুখিয়ন বেওয়া নামের জমি ওয়ারিশগণের অনুমতি ছাড়াই বন্টন নামা না করেই প্রতারণা করে মকবুল মন্ডল বিক্রি করেন। দুই দফায় দুজনের নিকট বিক্রি করলেও তারা কেউ তাদের নামে খারিজ খতিয়ান করতে পারেননি। প্রথম দফায় ১৯৭৬ সালে মকবুল মন্ডল জমিটি অন্যান্য ওয়ারিশগণের অনুমতি ছাড়াই জামালের নিকট বিক্রি করেন। এরপর জামাল ওই জমি খারিজ খতিয়ান না করেই ১৯৭৯ সালে সোনাভানের নিকট বিক্রি করেন। সোনাভান মারা গেলে তাঁর ওয়ারিশগণ ওই জমি সুজাউদ্দৌলার নিকট বিক্রি করেন। সুজাউদ্দৌলার নিকট বিক্রির পূর্বেই সোনাভানের ওয়ারিশগণ প্রতারণা আশ্রয় নিয়ে একটি ভুয়া খতিয়ান তৈরি করেন। অন্যান্য ওয়ারিশগণের অনুমতি না থাকায় প্রথম ক্রেতা খারিজ ও খতিয়াত করতে পারেনি। খারিজ খতিয়ান না থাকায় পানির দামে প্রতারক চক্র জমিটি ক্রয় করে নিজ নামে খারিজ, খতিয়ান করে নেয়। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান আছে। আমরা ওয়ারিশগণ এ সম্পত্তির মালিক। মামলা চলমান অবস্থায় সুজাউদ্দৌলা জোর পূর্বক এখন এ সম্পত্তিতে মাটি কেটে বিল্ডিং তৈরি করতে যাচ্ছেন। জমিটি এখনও আমাদের দখলে আছে।
সাবেক এ কাউন্সিলর আরো বলেন, জমিটি হাতিয়ে নিতে প্রকৃত মালিকদের বঞ্চিত করতেই তিনি নানাভাবে আমাদের হয়রানি করছেন। গত ১৭ নভেম্বর তিনি একটি সংবাদ সম্মেলনে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদা দাবির অভিযোগ তোলেন। আমি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে আমাদের সম্পত্তি ভূমি খেকোদের হাত থেকে মুক্তি পেতে আইনি সহায়তা চাই প্রশাসনের নিকট। জমির কাগজপত্র দেখে যদি মনে হয় আমরা ওই সম্পত্তির মালিক না তাহলে আমাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর যদি আমরা প্রকৃত মালিক হয়ে থাকি বা ওয়ারিশ হয়ে থাকি তাহলে উক্ত প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক বলে দাবি করেন তিনি।
জমির মালিকানা অনুযায়ী মৃত কাশেম মন্ডল, মৃত বয়েন ওরফে মায়নুদ্দীন, মৃত আবুল মন্ডল, আরশাদ মন্ডলের ছেলে মেয়ে ওই সম্পত্তির প্রকৃত ওয়ারিশ। সাবেক কাউন্সিলর টুটুল মৃত বয়েন ওরফে মায়নুদ্দীনের ছেলে। ৪১ জন ওয়ারিশ ওই সম্পত্তির বর্তমানে মালিক। তাঁরা বিজ্ঞ আদালতে ২৯ জনের বিরুদ্ধে বাটোয়ারা মামলা দায়ের করেছেন। ওই ২৯ জন ১৫৬ খতিয়ানের ১নং দাগের .৩৭ একর সম্পত্তি বাকী ৪১ জন ওয়ারিশকে বঞ্চিত করে জমিটি প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বিক্রি করেন। মৃত মকবুল মন্ডল বাকী ওয়ারিশগণের অনুমতি ছাড়াই জমিটি দুই দফায় বিক্রি করলেও তাঁরা খারিজ খতিয়ান না করতে পারায় সুজাউদ্দৌলা জমিটি ক্রয় করে। সে জমিটি ক্রয় করে ওয়ারিশ শাহনাজ বেগমের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করে তাকে দমন করার চেষ্টা করেন। এরপর ওই জমিতে জোর পূর্বক ভেকু নামিয়ে কাজ করতে গেলে ৪১ জন ওয়ারিশ বাধা প্রদান করেন।