অনলাইন ডেস্ক :
পূর্ব ঘোষণা অনুয়ায়ী, ৬ দাবিতে শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ভুক্তভোগী চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের স্বজনরা। আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকেই তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড় হন। অনেকে আবার রাত থেকেই সেখানে অবস্থান নেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল এবং কারাবন্দীদের মুক্তিসহ ৬ দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা শহীদ মিনারের চারপাশে বিভিন্ন ব্যনার ও প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়েছেন। তাদের সবার মাথায়ও বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ব্যাচ। শহীদ মিনারের একপাশে একটি সামিয়ানা টাঙিয়ে রাত্রিযাপন ও বিশ্রামের ব্যবস্থাও করেছেন তারা। সেখানে অনেকে বিশ্রাম করছেন।
চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের ৬ দফা দাবিগুলো হলো-
১। পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামারি কোর্ট গঠন করে যেসব বিডিআর সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে;
২। এরই মধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া কারাবন্দী বিডিআর সদস্যদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এ ছাড়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে;
৩। গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ব্যতীত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ)নং ধারা বাদ দিতে হবে। একই সঙ্গে স্বাধীন তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন, মূল ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে;
৪। পিলখানায় শহীদ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ জন বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে কারাগারে মারা যাওয়া সব বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে;
৫। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে;
৬। পিলখানার হত্যাকাণ্ডে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে। একই সঙ্গে শহীদদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে তারা ‘বিজিবি না বিডিআর, বিডিআর বিডিআর’, ‘দিল্লি না ঢাকা-ঢাকা ঢাকা’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম সংগ্রাম’ সহ দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ফয়জুল আলম বলেন, ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ডে প্রহসনমূলক মামলায় নিরপরাধ জেলবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যায়ভাবে যাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের সরকারি সব ধরনের ক্ষতিপূরণসহ ৬ দফা অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। সেজন্য ১১, ১২ ও ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমরা লাগাতার শহীদ মিনারে অবস্থান করব।’ এর মধ্যে সুখবর না এলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।