মোঃ আতিকুর রহমান আতিক, রাজশাহী:
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর পরই শামিম রেজা হিটলার গং বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে বহিরাগত শতাধিক সন্ত্রাসীদের নিয়ে রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতির নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটি ভেঙে দিয়ে জোরপূর্বক সমিতি দখলে নিয়ে সমিতির কার্যালয়ে প্রতিনিয়ত বহিরাগত সন্ত্রাসীদের বসিয়ে রেখে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা ও সাধারণ সদস্যদের প্রতি অন্যায় অত্যাচার এবং সদস্যদের জমাকৃত অর্থ তসরুপাত প্রতিয়মান হলে সাধারণ সদস্যদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি মহানগর বিএনপি নেতৃবৃন্দের দৃষ্টিগোচর হলে তারা প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয় দখলবাজ শামীম রেজা হিটলার গংদের সাথে মহানগর বিএনপির কোন দলীয় সম্পর্ক নাই। উল্টো তথ্য উপাত্তে প্রমাণিত হয়েছে তারা বিগত সরকার দলীয় নেতাদের মদতপুষ্ট ও সুবিধাভোগী ছিলেন। এমনকি তাঁরা গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আ’লীগের মেয়র প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটনের নৌকা প্রতীকের পক্ষে সরাসরি মিছিলে ও বিভিন্ন প্রচারণায় অংশগ্রহণকারী। তাদের এমন রাজনৈতিক দ্বিচারিতার বিষয়টি সামনে চলে আসলে সমিতির ক্ষুব্ধ সাধারণ সদস্যরা গত ২৮ শে অক্টোবর সমিতির সভায় তাদের বিভিন্ন প্রকার স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে বুলবুল-হিটলার কমিটিকে বিলুপ্ত করে হাফিজুল্লাহ পারভেজ জুয়েলকে আহ্বায়ক ও মোঃ সুমন রেজাকে সদস্য সচিব করে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এরপরে কয়েক দফা সময় নিয়েও তারা এখন পর্যন্ত সমিতির সদস্যদের জমাকৃত কয়েক লক্ষ টাকার হিসেব বুঝিয়ে না দিয়ে উল্টো সমিতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এসবের মধ্যেই এক অনুসন্ধানে শামীম রেজা হিটলারকে নিয়ে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে নানা চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন রাজশাহী সদর সাবরেজিস্ট্রার জামিনুল হকের ঘুষ গ্রহণের ‘দালাল’ হিসেবে কাজ করতেন এই শামীম রেজা হিটলার। ওই সময় মাত্র ৩ মাসের মধ্যে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ঘুষ বাণিজ্য করেন সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হক। বড় কমিশনের বিনিময়ে সেই বাণিজ্যের সম্পূর্ণ মধ্যস্থতাকারী ও দালাল ছিলেন শামীম রেজা হিটলার। পরে ঘুষ গ্রহণ সংক্রান্ত বিভিন্ন কথোপকথন, ভিডিও ক্লিপসহ সব প্রমাণ প্রকাশ হওয়ায় ছুটির অযুহাতে কর্মস্থল থেকে সটকে পড়েন সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হক। বেরিয়ে আসে হিটলারের অবৈধ বাণিজ্যের চিত্র। হিটলারের এসব অপকর্ম প্রমাণিত হলে এক জরুরী সভায় উপস্থিত সদস্যগণের সর্বসম্মতিক্রমে তার দলিল সম্পাদন সংক্রান্ত সব কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।
সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হক ও দালাল শামীম রেজার ঘুষ বাণিজ্য ও অপকর্ম নিয়ে ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতীয় দৈনিক যুগান্তর। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, তৎকালীন সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হক রেজিস্ট্রি বাণিজ্য করতে বিকাল তিনটার পর কোনো দলিল রেজিস্ট্রেশন করবেন না বলে একটি মৌখিক আইন জারি করেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে অনেকেই বিকাল তিন টার মধ্যে দলিল রেজিস্ট্রেশনের জন্যে দাখিল করতে ব্যর্থ হতেন। তখন বেঁধে দেয়া সময়ের পর দলিল রেজিস্ট্রেশন করাতে যাতে দেন দরবারে যেতে হয়, এমন পরিবেশ তৈরি করতেন সাব-রেজিস্ট্রার। এই দেন দরবারের দালাল হিসেবে কাজ করতেন শামীম রেজা হিটলার। এভাবেই দীর্ঘদিন দিন ধরে চলতে থাকে তাদের রেজিস্ট্রি বাণিজ্য।
তবে এসবের মধ্যেই একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের ঘুষ বাণিজ্যের মুখোশ উন্মোচিত হয়। যুগান্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজশাহী মহানগরীর আলম ফিলিং স্টেশনের মালিক আজিজুল আলমের চারটি দলিল (ক্রমিক নম্বর- ৭৩১৭, ৭৩১৮, ৭৩১৯ ও ৭৩২০) রেজিস্ট্রেশনের জন্য সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হকের কাছে দাখিল করা হয়। কিন্তু ওই সময় সাব-রেজিস্ট্রার দলিল চারটি রেজিস্ট্রেশনে রাজি হননি। ঊর্ধ্বতন মহল থেকেও দলিলগুলো সম্পাদনের অনুরোধ করা হলেও সাব-রেজিস্ট্রার দলিলগুলো রেজিস্ট্রেশন করবেন না বলে জানিয়ে দেন।
দলিলগুলো রেজিস্ট্রেশন করা খুব জরুরি হওয়ায় তখন দেনদেরবার শুরু হয়। একপর্যায়ে সাব-রেজিস্ট্রারের দালাল হিসেবে পরিচিত রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতির সদস্য শামীম রেজার সঙ্গে আলম ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মো. মিলন চারটি দলিল সম্পাদনে ৪৮ হাজার টাকার দফারফা করেন। এরপর দালাল হিটলারের মাধ্যমে ওই পরিমাণ টাকা নিয়ে সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হক রাজশাহী পর্যটন মোটেলের ১২৬ নম্বর কক্ষে ২৭ নভেম্বর রাতে দলিল চারটি রেজিস্ট্রেশন করেন।
এ ব্যাপারে আলম ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মো. মিলন ওই সময় যুগান্তরকে দেয়া বক্তব্যে বলেন, ব্যাংক ঋণের জন্য দলিলগুলো সম্পাদন করা জরুরি ছিল। এ কারণে ২৭ নভেম্বর বিকালে চারটি দলিল সাব-রেজিস্ট্রারের দফতরে দাখিল করা হয়। কিন্তু দুপুর ৩ টা পার হয়ে যাওয়ায় দলিলগুলো রেজিস্ট্রেশন করতে রাজি হননি সাব-রেজিস্ট্রার। পরে শামীম রেজার মাধ্যমে ৪৮ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে দলিলগুলো পর্যটন মোটেলে সাব-রেজিস্ট্রারের কক্ষে বসে রেজিস্ট্রেশন করতে বাধ্য হয়েছি। একইভাবে আলম ফিলিং স্টেশনের মালিক আজিজুল আলমও সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হক ঘুষ নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন। ঘুষ নেয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হক অসুস্থতার জন্য ছুটির দরখাস্ত কর্মস্থলে ডাকে পাঠিয়ে দেন। এরপর তিনি আর কর্মস্থলে যোগ দেননি।
অনুসন্ধান চালিয়ে যুগান্তর তাদের ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, কর্মস্থলে যোগ দেয়ার পর থেকেই দলিল রেজিস্ট্রি করতে আসা ক্রেতা-বিক্রেতা ও দলিল লেখকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করতেন সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হক। দালাল শামীম রেজা হিটলারের মাধ্যমে মাত্র ৩ মাসের মধ্যে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেন সাব-রেজিস্ট্রার। দলিল লেখক শামীম রেজা হিটলার সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হকের পক্ষে অর্থ গ্রহণ ছাড়াও তার ব্যক্তিগত কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। হিটলারের বাড়ি রাজশাহী সদর সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয় সংলগ্ন বুলনপুর এলাকায়। সাব-রেজিস্ট্রার রাজশাহীতে অবস্থানকালে তাকে হিটলারের বাড়ি থেকে খাবার সরবরাহ করা হতো।
রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতির তৎকালীন এক দায়িত্বশীল নেতা যুগান্তরকে দেয়া বক্তব্যে জানান, শামীম রেজা হিটলারের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রারের ঘুষ নেয়ার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। তিনি জানান, দলিল লেখক সমিতির সভায় হিটলার বিষয়টি নিজের মুখে স্বীকারও করেছেন। এ কারণে ওই সময় সদর দলিল লেখক সমিতির জরুরি সভায় শামীম রেজা হিটলারকে দলিল সংক্রান্ত সব কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়। দলিল লেখক শামীম রেজা সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য ঘুষ নেয়ার বিষয়টি ওই সময় যুগান্তরের কাছে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তিনি পারিশ্রমিকের টাকা নিয়েছেন। তাহলে দলিল লেখক সমিতির সভায় সাব-রেজিস্ট্রারের জন্য ঘুষ নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন কেন?- যুগান্তরের করা এমন প্রশ্নের উত্তরে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি শামীম রেজা হিটলার।
অনুসন্ধান চালিয়ে আরও জানা যায়, শামিম রেজা হিটলার সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হকের দালাল হিসেবে কাজ করা কালীন ঘুষ বাণিজ্যের একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে সাদিয়ার রহমান ভুটান নামের একজন দলিল লেখক’কে চরম অপমান অপদস্থ করেন ও তাকে মার ধরে উপনীত হন এবং তাকে জীবন নাশের হুমকি দেন। পরে এ ঘটনা ডানা মেললে ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলিল লেখক সমিতির কার্যালয়ের সামনে ভুটানের কিছু আত্মীয় স্বজন শামীম রেজা হিটলারের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা হাতুড়ি দিয়ে হিটলারের মাথার পেছনে আঘাত করে। এক পর্যায়ে হিটলারের সহকর্মীরা এগিয়ে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। হামলার ঘটনা তুলে ধরে ওইদিন বেশ কিছু শীর্ষ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
দৈনিক জনকন্ঠের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতির কার্যালয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে রাজশাহী সদর দলিল লেখক সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য কলমবিরতির ডাক দেয়। সভায় হিটলারের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। ওই ঘটনা নিয়ে সদর দলিল লেখক সমিতির ওই সময়ের সভাপতি মহিদুল হক জনকন্ঠকে দেয়া বক্তব্যে দলিল লেখক হিটলারের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানান। হামলাকারীদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত কলম বিরতি অব্যাহত থাকবে এবং দলিল রেজিস্ট্রি কার্যক্রম চলবে না বলেও বিবৃতি দেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এ ঘটনার পর দলিল লেখক শামীম রেজা হিটলারের মা মুক্তা শারমীন বাদী হয়ে ওইদিনই নগরীর রাজপাড়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় দলিল লেখক ভুটান, তার ছেলে সাগর, কাজল, জীবন ওরফে হাড্ডুকে এজাহারভুক্ত এবং আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে দু’জন- ভুটান এবং কাজল দলিল লেখক সমিতির সদস্য হওয়ায় তাদের দুজনকেই স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে তৎকালীন কার্যনির্বাহী কমিটি।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, এ ঘটনার কয়েকমাস পর সাব-রেজিস্ট্রার জামিনুল হকের ঘুষকাণ্ডে দালালির সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রকাশ্যে আসলে জনরোষের মুখে পড়েন শামীম রেজা হিটলার। সাসপেন্ড হওয়া এবং সাব রেজিস্ট্রার জামিনুল হকের আর কর্মস্থলে না ফেরায় সমিতির অভ্যন্তরে দুর্বল হয়ে পড়েন দালাল হিটলার। এ কারণে তিনি ভুটানের বিরুদ্ধে করা মামলা আর এগিয়ে নেয়ার সাহস করেননি।
ফলে ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর দলিল লেখক সমিতির কাউকে না জানিয়েই গোপনে মামলার বিষয়ে ভুটানের সঙ্গে আপোস ও মিমাংসা করে নেন। এছাড়া রাজশাহীর অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লিখিত জবানবন্দি দেয়ার মধ্য দিয়ে মামলার নিষ্পত্তিও করেন। ঘুষকাণ্ডে দালালি ও মামলার ঘটনার পর থেকে সদর দলিল লেখক সমিতির সকল সদস্যদের কাছে অত্যন্ত ‘অসৎ-অনৈতিক’ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি পান শামীম রেজা হিটলার। তবে অসম্ভব হলেও সত্য, এই হিটলারই সদস্যদের জিম্মি করে ও ভুয়া রাজনৈতিক পরিচয়ে পুরো দলিল লেখক সমিতি দখলে নিয়েছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলিল লেখক বলেন, আমরা অবাক হচ্ছি, কেমন করে শামীম রেজা হিটলারের মতো একজন মানুষ আমাদের নেতৃত্ব দিতে চায়। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সেবাদানকারী সংগঠন এটি। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ওর (হিটলার) মতো একজন অসৎ, দালাল হিসেবে স্বীকৃত ব্যক্তি কোন ভাবেই যায় না। আমরা কখনোই এটি মানিনি, আগামীতেও মানবো না।
তিনি আরও বলেন, সদর দলিল লেখক সমিতিতে সে (হিটলার) একজন কলঙ্ক। মানুষকে জিম্মি করা তার দালালীর ইতিহাস সবাই জানে। সে নিজে মানুষকে মারে এরপর নিজে মার খায়। পরে নিজেই মামলা করে, আবার নিজ স্বার্থে নিজেই সেই মামলা আপোস করে নেয়। এসব তো সমিতির সবার জানা। কিন্তু লক্ষ্য করছি, এটিকে সে মিথ্যা গল্প বানিয়ে রাজনৈতিক রুপ দিয়ে নেতাদের করুণা নিতে চাচ্ছে। সবাই সবকিছু জানার পরও বলে বেরাচ্ছে, অমুক আমাকে মারিয়েছে, তমুক আমাকে মামলা দিয়েছে। এসব পুরোটাই মিথ্যা।
এসব বিষয়ে জানতে শামীম রেজা হিটলার কে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি।