সৈয়দ এম এ জিন্নাহ্ ::
আড্ডা, গল্প আর স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে নড়াইলে ১০৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী কালীপ্রসন্ন(কেপি) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৩এপ্রিল ঈদের দ্বিতীয় দিন বর্ণিল আয়োজনে এ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রাখা হয় নানা আয়োজন। অনুষ্ঠানে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণ মিলনমেলায় পরিণত হয়। অনুষ্ঠানে কেউ বহু বছর পর পুরোনো বন্ধুর দেখা পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়েছেন। আবার কেউ হারিয়ে যাওয়া বন্ধুর দেখা না পেলেও তার খোঁজ জানতে পেরেই খুশি হয়েছেন। পুরনো স্মৃতির কথা মনে করে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েন সাবেক শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষাজীবনের বাল্যবন্ধুদের দীর্ঘদিন পর একত্রে পেয়ে গল্প, হাসি-ঠাট্টা, নাচে গানে মেতে ওঠেন সবাই। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তারা ফিরে যান সেই কৈশোর-তারুণ্যের বিদ্যালয় জীবনে।
প্রয়াত জারি গানের সম্রাট চারণ কবি মোসলেম উদ্দিন ও উপমহাদেশের প্রখ্যাত কবিয়াল বিজয় সরকারসহ এই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে আজ কেউ সচিব, প্রশাসক, পুলিশ কর্মকর্তা, গণমাধ্যম কর্মী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার,ব্যবসায়ীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। তাদের অধিকাংশই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহোযোগিতার জন্য একটি দরিদ্র তহবিল গঠন করা হয় এবং বিভিন্ন সামজিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহণের জন্য প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি কল্যাণ কমিটিও গঠন করা হয়।
দুই পর্বের অনুষ্ঠানের প্রথম পর্যায় সকাল ১০টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ইঞ্জি. আজিজুল হক মিনা। এরপর পর্যাক্রমে চলতে থাকে র্যালী, কোরআন তেলাওয়াত ও গীতা পাঠ, স্বাগত বক্তব্য, আলোচনা, নামাজের বিরতি, মধ্যাহ্ন ভোজ ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ।
অনুষ্ঠানের সন্ধ্যা অধিবেশনে কবিতা আবৃত্তি, দলীয় নৃত্য, সংগীত ও ঐতিহ্যবাহী জারী গান পরিবেশন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের গুণী শিল্পীরা। একদিকে নবীন-প্রবীণ ছাত্র শিক্ষকদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।
অন্যদিকে আয়োজনকে ঘিরে গ্রামীণ বাহারী হরেক রকমের ঐতিহ্যবাহী খাবারের দোকান বসে। আগত সকলের মুখে লেগে ছিল যেন খুশির ফোয়ারা।হাজার প্রাণের এ মিলন মেলা দেখে মনে হয় এ যেন এক আনন্দ নগরী।মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলে।
অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ডাঃ আব্দুর রউফের সঞ্চালনায় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র চারণ কবি অধ্যক্ষ রওশান আলী।