রাজশাহী ব্যুরো :
নাটোরে সিংড়ায় বিএনপির জনসভার মঞ্চে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান দৃষ্টির উপস্থিতিকে ঘিরে নানান আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে সিংড়া কোর্ট মাঠে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ফারজানা রহমান দৃষ্টিকে দেখার পরেই সিংড়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার ঝড় ওঠে।
স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এম. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। জনসভা মঞ্চে দলটির কেন্দ্রীয় নেতা কাজী গোলাম মোর্শেদ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ এমদাদুল হক আল মামুন মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। রহিম নেওয়াজ ও শেখ এমদাদুল হক আল মামুনের ঠিক পেছনেই বসেন পলকের শ্যালিকা ফারজানা রহমান দৃষ্টি।
যুব মহিলা লীগ কর্মী ফারজানা রহমান দৃষ্টি ২০২০ সালে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। তিনি সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী, জুনাইদ আহমেদ পলকের চাচা শ্বশুর প্রভাষক আনিছুর রহমান মেয়ে এবং সিংড়া উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনুর ভাতিজি।
সিংড়া পৌর বিএনপির সদস্য সচিব তায়েজুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা এমন একজন মহিলা মঞ্চে ওঠার সুযোগ পায় কিভাবে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি যুব মহিলা লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তাকে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে দেখা যেত। তিনি নৌকার নির্বাচনি প্রচারণাতেও নিয়মিত যোগ দিতেন। ফারজানা রহমান দৃষ্টি সাবেক প্রতিমন্ত্রী পলকের প্রভাব দেখিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স দখল করে এখনও সেখানে একটি ক্লিনিক দিয়ে রেখেছেন। আর উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু তাকে আজকে মঞ্চে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমরা এই ঘটনা নিন্দা জানাই এবং দলীয় হাই কমান্ডকে আহ্বান জানাই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য। আত্মীয়করণ করে দলের ক্ষতি আমরা মেনে নেব না।
ফারজানা রহমান দৃষ্টি বলেন, আমি বিভিন্ন সামাজিক কাজের সাথে জড়িত এটা সবাই জানে। আমি আওয়ামী লীগের কোনো প্রাথমিক সদস্য পদেও নেই। সুতরাং অন্যান্য পদে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। আমি সমাবেশে গিয়েছি সেটাও কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা হিসেবে যাইনি। যেহেতু সামাজিক কাজ করি, তাই একটি পক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিত আমাকে হেয় করতেই এগুলো ছড়াচ্ছে।
সিংড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, আমি তাকে মঞ্চে উঠাইনি। অনেক মানুষ জনসভায় এসেছে, কিভাবে উঠেছে জানিনা। আর সে যে যুব মহিলা লীগের কোনো পদে রয়েছে এ বিষয়টি আমি জানতাম না।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এম. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, মিটিংয়ে হাজার হাজার লোক এসেছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে তো কাউকে চিনি না। আমাদের কানে যখন বিষয়টি এসেছে তাকে সড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) অ্যাডভোকেট শাহীন শওকত বলেন, বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জেনেছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।