অনলাইন ডেস্ক :
বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় এনে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৭ মার্চের ভাষণ শুধু আমাদের নয়, এটি বিশ্ব ঐতিহ্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, ‘ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না। সত্যকে কখনো মিথ্যা দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। আজকে সেটিই প্রমাণ হয়েছে। ’
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণে সেই সময় মানুষকে যেভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে। আজকে এই ভাষণ শুধু আমাদের না, আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি পেয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতা হঠাৎ আসেনি। দীর্ঘদিনের পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা এসেছে। এটি তিনি (বঙ্গবন্ধু) কাউকে বলেননি। জনগণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি কাজ করে গেছেন।
তিনি বলেন, সত্তরের নির্বাচনের পর যখন ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা দিলো না। ২৫ মার্চ যখন গণহত্যা শুরু করল। পরদিন ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানে বন্দি করে রাখা হলো। এরপরই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এবং বিজয়। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ শুধু মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করেনি, শুধু গেরিলা যুদ্ধের প্রস্তুতি দেয়নি, একটা যুদ্ধের বিজয় এনে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে যেভাবে হত্যা করা হলো। পাকিস্তানিরা বলতো বাংলাদেশ স্বাধীন হলে কিছু করতে পারবে না। বাংলাদেশ তাদের কাছে বোঝা ছিল, স্বাধীন হয়ে ভালই হয়েছে- এ ধরনের কথা তারা বলেছে। কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র ৩ বছর ৭ মাসের মধ্যে একটা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলে নিয়ে বাংলাদেশকে যখন বঙ্গবন্ধু স্বল্পোন্নত দেশে উন্নীত করলেন। এরপর যখন দেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সেটাই স্বাধীনতাবিরোধীদের সহ্য হয়নি। দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, পাকিস্তানিরা তাকে হত্যা করতে পারেনি। কিন্তু যারা আমাদের দেশের, যারা দিনরাত আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করত, তাদেরই দেখলাম ঘাতকরূপে।
শেখ হাসিনা বলেন, মার্শাল ল’য়ের মধ্যেও নির্বাচন দেওয়ার ওয়াদা করেছিল ইয়াহিয়া খান। ওয়াদার মধ্যেও কিছু শর্ত ছিল। আমাদের দেশের অনেক রাজনৈতিক দল, রাজনৈতিক ব্যক্তি এ নির্বাচনে বিরোধিতা করেছিল। সেই শর্ত মেনেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তার (বঙ্গবন্ধু) কথা ছিল, কে এদেশের নেতৃত্ব দেবে এটা আগে জনগণ ঠিক করুক।
সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজহার খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ।