মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী:
‘পরিচ্ছন্নতা শুরু হোক আমার থেকে’ এই শ্লোগানে জাতীয় যুব দিবস-২০২৪ উপলক্ষে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব নির্মূলের অংশ হিসেবে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনস্থ গাঙপাড়া খাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকাল ৯:৫০ ঘটিকায় রাজশাহী বায়া ব্রিজ চত্বর এলাকায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে খাল পরিষ্কার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। এসময় বিভাগীয় কমিশনার বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে জাতীয় যুব দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এ দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে রাজশাহী নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব নির্মূলের অংশ হিসেবে গাঙপাড়া খালে পরিষ্কার অভিযান শুরু করেছে- বিভাগীয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর। রাজশাহী সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে গাঙপাড়া খালের মুখে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের কাজে অংশ নেন প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা।
খাল পরিষ্কার অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. মুখলেছুর রহমান , তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রবীণ কুমার গোস্বামী , আরিফুল রহমান অঙ্কুর সহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রতিনিধি, রাসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মোঃ মামুন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যবৃন্দ, বিডি ক্লিন রাজশাহীর জেলা সমন্বয়ক শাহদাত হোসেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিডি ক্লিনের সদস্যসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সদস্যবৃন্দ।
“দক্ষ যুব গড়বে দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় যুব দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে পবা উপজেলা পরিষদে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ও রাসিক প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নির্মূলের লক্ষ্যে পরিচ্ছন্নতার সুফল সম্পর্কে এলাকাবাসীকে সচেতন করতে নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে। রাজশাহী বরেন্দ্র অঞ্চল অধিক খরা প্রবণ এলাকা। এই অঞ্চলের খাল-বিলের পানি কৃষি কাজসহ জীব ও বৈচিত্র্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়াও পরিচ্ছন্ন নগর হিসেবে খ্যাত রাজশাহী মহানগরীকে ডেঙ্গু ও দূষণমুক্ত রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে আজ বায়া ব্রিজ এলাকার গাঙপাড়া খালে সাড়ে ১১ কি.মি. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দুয়ারী খাল ও জিয়া খালের অবৈধ দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করার লক্ষ্যে এই অভিযানের আওতায় আনা হবে। এর ফলে সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৮০ ভাগ খাল দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করা সম্ভব হবে। এই খালগুলো নতুন করে যেন ময়লা ফেলা না হয়, এ জন্য সকল জনগণকে সচেতন হতে হবে।
এসময় বিভাগীয় কমিশনার বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে প্রবাহিত খালগুলো অপরিচ্ছন্ন থাকায় পানি বারনই নদীতে নামতে পারে না। এর ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সীমিত পরিসরে জলাবদ্ধতা নিরসনের অংশ হিসেবে আজ গাঙপাড়া খালের মুখে ময়লা-আবর্জনা অপসারণের অভিযান শুরু করা হয়েছে। এখন সবার সহায়তায় ধান-নদী-খাল এই তিনে রাজশাহীর পুরনো সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই।
তিনি আরও বলেন, যুব শক্তিই উন্নয়নের উৎস, তারাই জাতির প্রাণ প্রবাহ, উন্নত ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে যুব দিবস উপলক্ষে যুবদের অনুপ্রাণিত করতে তাদের সহযোগিতায় এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মহানগরীর বিভিন্ন খালে পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য অবৈধ স্যুয়ারেজ সংযোগ যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে তদারকি কার্যক্রম চলমান থাকবে। প্রয়োজনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গাঙপাড়া খালসহ নগরীর বিভিন্ন খালের খনন, সংস্কারসহ আধুনিকায়নে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রজেক্ট ডিজাইন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন ও যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর পবার আয়োজনে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামীল, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক সরকার অসীম কুমার। পবা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা এমএমএন জহুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর রাজশাহীর উপ-পরিচালক এ.টি.এম গোলাম মাহবুব। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহা. যোবায়ের হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহিদ হাসান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের বিভাগীয় প্রতিনিধি হাসান শেখ ও উদ্যোক্তা রিপা খাতুন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে যুব ঋণের চেক, ক্রেস্ট, সনদপত্র ও গাছের চারা প্রদান করা হয়। পরে উপজেলা প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপন করেন বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়।