আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের গাজায় দীর্ঘ ১৫ মাস রক্তক্ষয়ের পর অবশেষে কার্যকর হতে যাচ্ছে যুদ্ধবিরতি চুক্তি। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভায় গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা ১৯ জানুয়ারি (রোববার) থেকে কার্যকর করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। একইসঙ্গে প্রথম দফায় বন্দি মুক্তির প্রক্রিয়াও শুরু হবে। খবর রয়টার্সের
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোটাভুটির কয়েক ঘণ্টা আগে নেতানিয়াহু জানান, ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ। এখন পূর্ণ মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জানিয়েছেন তিনি। তবে চুক্তিটি ইসরায়েলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত থেমে যাবে। এরই মধ্যে গাজার অনেক অংশ ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল এবং ৪৬ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এছাড়া, ২৩ লাখেরও বেশি মানুষের ঘরছাড়া হওয়ার মতো মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
চুক্তির প্রথম ধাপে হামাস ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দেবে। যার মধ্যে নারী, শিশু এবং ৫০ বছরের বেশি বয়সী পুরুষরা অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে, ইসরায়েল প্রথম ধাপে কারাগারে আটক সমস্ত ফিলিস্তিনি নারী ও ১৯ বছরের কম বয়সী শিশুদের মুক্তি দেবে। বন্দিদের সংখ্যা ৯৯০ থেকে ১,৬৫০-এর মধ্যে হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জনের বেশি নিহত হন। জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় আড়াই শ জনের বেশি মানুষকে। তাঁদের মধ্যে অনেককে মুক্তি দিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গাজায় হামাসের কাছে এখনো ৯৮ জন জিম্মি জীবিত অথবা মৃত অবস্থায় রয়েছেন।
হামাসের ওই হামলার দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার আকাশ, স্থল ও জলপথে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গাজা কর্তৃপক্ষের হিসাবে, এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি মানুষ। হামলা থেকে প্রাণ বাঁচাতে একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ২৩ লাখ মানুষ।