মো: সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী:
রাজশাহী দুর্গাপুরে একটি ক্লিনিকে অস্ত্রোপচার কালে রোকসানা বেগম (২৮) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাতে দুর্গাপুর উপজেলা সদরে অবস্থিত ‘মা ও শিশু ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঐ ঘটনার পর রাতেই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ক্লিনিকে তালা দিয়ে পালিয়ে যায়। নিহত প্রসূতি দুর্গাপুর পৌর এলাকার দেবীপুর মোল্লা পাড়া গ্রামের আবু হানিফের স্ত্রী।
নিহতের স্বজনরা জানান, গত রোববার রাত ৮টার দিকে প্রসূতি রোকসানা বেগমকে উপজেলার সদরে ‘মা ও শিশু ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করতে নিয়ে আসা হয়। এরপর রোকসানাকে সিজার করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। থেয়েটারে নেওয়ার পরে তাকে ইনজেকশন দেওয়া হয়। এসময় বাহিরে অপেক্ষা করেন স্বজনরা। কিছুক্ষন পরে হাসপাতালে জরুরী রোগী এসেছে বলে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে চলে যায় কর্তব্যরত চিকিৎসক মিল্টন খন্দকার।
এসময় প্রসূতীর স্বজনদের সন্দেহ হয়। মিল্টন খন্দকার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সএ আবাসিক মেডিকেল অফিসার। তিনি ‘মা ও শিশু ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ নিয়মিত অস্ত্রোপচার ও রোগী দেখেন। এরপর সেখানকার নার্স ও ক্লিনিক পরিচালক আলতাফ হোসেন রোগীর অবস্থা খারপ বলে তড়িঘড়ি করে রোগীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার কথা বলে বের করে দেন। পরে প্রসূতির নাকের কাছে হাত নিয়ে দেখেন শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ। এরপর সেই অবস্থায় প্রসূতি রোকসানাকে আরেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায় প্রসূতি রোকসানা অনেক আগেই মারা গেছেন। তবে সিজার অপারেশনের যে সকল প্রস্ততি তা কোন চিকিৎসক নিয়েছিলো তা শিকার করেননি কেও। এরই মধ্যে ক্লিনিক ছেড়ে পালিয়ে যায় নার্স ও মালিক পক্ষ। এখন পর্যন্ত ওই ক্লিনিক তালা বদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়।
নিহতের স্বামী আবু হানিফ বলেন, ‘চিকিৎসক ভুল ইনজেকশন অথবা ভুল স্থানে ইনজেকশন দিয়ে অপারেশন থিয়েটারেই আমার স্ত্রীকে মেরে ফেলেছে। আমার স্ত্রী স্বাভাবিক ও সুস্থ ছিলো। আমি এর বিচার চাই।
এবিষয়ে ‘মা ও শিশু ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলতাফ হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দুরুল হোদা বলেন, প্রসূতির মৃত্যুর খবর পেয়েছি। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এবিষয়ে,ডা মিল্টন খন্নকার বলেন, আমি অপারেশন করতে ক্লিনিকে গিয়েছিলাম। রোগীর কাছে গিয়ে দেখি রোগীর অপারেশন করার প্রাথমিক যে প্রস্তুতি তা চলছে। এমনকি ক্লিনিকের অ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার ক্লিনিকের বাহিরেই ছিলেন। তবে মনে হচ্ছিল রোগীর শ্বাসকষ্টে হচ্ছে। এতে আমি রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে চলে আসি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, আমাকে কর্তৃপক্ষ বা রোগীর স্বজনরা কেউ এ বিষয়ে জানায়নি। তবে আমি শুনেছি মা ও শিশু ক্লিনিকে একজন সিজারের রোগী মারা গিয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবরিনা শারমিন বলেন, আমার এ বিষয়ে জানা নেই। তবে আমি খোঁজ খবর নিয়ে জানবো। এমনকি অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।