মোঃ সাকিবুল ইসলাম স্বাধীন, রাজশাহী:
রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) এস আই রহিমের বিরুদ্ধে মামলা ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী একজন এনজিও কর্মী। মাদক মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবার রাজশাহী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ দিয়েও এখন অবদি প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগী ও তাঁর পরিবার। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ওই এনজিও কর্মী রাজশাহী জেলার দূর্গাপুর থানাধীন নওপাড়া ইউনিয়নের পুরান তাহিরপুর গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে মুরাদ হোসেন (৩১)। গত ১৫ সেপ্টেম্বর জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও কোন ব্যাবস্থা নেওয়া হয়নি। রহস্য জনক ভাবে বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টায় চলছে।
ভুক্তভোগী মুরাদ বলেন, আমি পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন গত ২৮ আগস্ট বিকেল ৫ টার দিকে এনজিও কর্মী হিসেবে দূর্গাপুর থানাধীন পুরান তাহিরপুর গ্রামের মোহনগঞ্জ বাজারের পাশে অবস্থিত “বিয়ান বাড়ি কফি হাউজ অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে কফি পানের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিলেন তিনি। এমন সময় হঠাৎ এসআই রহিমসহ সঙ্গীয় ছয় জন ব্যক্তি সিভিল পোশাকে তাঁকে সেখান থেকে তুলে সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েনের পুকুরের প্রজেক্টে নিয়ে যায়। পরে এসআই রহিমসহ তার সঙ্গীয় ছয় জন ব্যক্তি তাঁর কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করেন। টাকা না দেওয়া হলে তাকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হবে বলে ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন তারা। ছেলেকে আটকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে স্থানীয়দের নিয়ে পৌছান বাবা সাহেব আলী। অর্থ না দিলে ছেলের কপাল পুড়বে সেই ভয়ে ২ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা এসআই রহিমকে প্রদান করেন। অর্থ পাওয়ার পরও তাঁর কাছে থাকা একটি বাটন ফোন ও একটি রিয়েলমি (অ্যান্ডরয়েড) মোবাইল ফোন এসআই রহিম জব্দ করার নামে নিজের হেফাজতে রাখেন। পরবর্তীতে ব্যবহ্ত মোবাইল দুইটি ফেরত পেতে এসআই রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে গত (৩০ আগস্ট) বেলা ১২টার দিকে নগরীর ভেড়িপাড়া মোড়ে মোবাইল দুইটি মুরাদকে বুঝিয়ে দেন এসআই রহিম।
মুরাদ আরোও জানায়, অভিযোগের পরবর্তীতে এসপি অফিসে বিষয়টার কি অবস্থা জানতে গেলে খাইরুল সাহেব প্রথমে বলে এ বিষয়ে তদন্তে হচ্ছে। কিছুদিন পর আবার বলে অভিযোগের সত্যতা পাইনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, যেখানকার ঘটনা সেখানে কেউ যায়নি বা কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে কেউ তদন্তে আসেনি মর্মে জানতে পারি। এছাড়াও সরজমিনে যারা ছিল তাদেরও কাউকেই ফোনও করা হয়নি। তাহলে তারা ঘটনা স্থলে না এসেই অফিসে বসে কিভাবে তদন্ত করলো? প্রশ্ন রাখেন তিনি। এই প্রশ্নে এসপি অফিসের কোনো কর্মকর্তা তাঁকে কিছু জানায়নি। ভুক্তভোগী এসব বিষয়ে এরপর সংবাদ সম্মেলন করবেন বলেও উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডিবি’র এসআই রহিম জানান, আমি তো মুরাদ নামের কাউকে চিনি না। পড়ে অভিযোগের বিষয় বললে তিনি বলেন, আপনি আমার উদ্ধর্তন স্যারদের সাথে কথা বলেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা ডিবি’র ওসি রুহুল আমিন বলেন, বিষয়টা তদন্তে আছে। পুরোপুরি রিপোর্ট হাতে পেলে জানাতে পারবো। ফোনে বক্তব্য না নিয়ে আপনি অফিসে আসেন বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করি যেনো সঠিক তদন্তের জন্য উপকার হয় আমাদের।
রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র বলেন, এই অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ভুক্তভোগীসহ সকলকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে তলব করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যোগাযোগ করা হলে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান বলেন, আমি নতুন জয়েন্ট করেছি। বিষয়টা আমার জানা নাই। অভিযোগের কপিটা আমায় দেন। আমি আমার কর্মকতাদের কাছে এই বিষয়ে জেনে ব্যবস্থা নিবো।