মোঃ আতিকুর রহমান, রাজশাহী ব্যুরো :
৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী সরকার শেখ হাসিনা পতনের পরে বিএনপি’র কর্মীরা রাজশাহী সড়ক পরিবহন ভবন অবৈধভাবে দখল করার পলিকল্পনায় ব্যস্ত। মূলত বাস মালিকদের কাছে থেকে চাঁদাবাজি করায় এই সংগঠনের মূল কাজ।
গত ৯ আগস্ট রাজশাহী সড়ক পরিবহন দখলে নেয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মীরা। এরপর তারা দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে শুরু হয় লীলাখেলা। এক পক্ষের মানববন্ধন বন্ধ করতে গিয়ে দুই পক্ষের হাতাহাতি শুরু হয়। যে পক্ষ মানববন্ধনে বাধা দেই আবার সেই পক্ষই সংবাদ সম্মেলনে দাবি করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। এক পক্ষ চাই দখল নিয়ে থাকতে আরেক পক্ষ চাই সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে চলবে সড়ক পরিবহন গ্রুপ।
১৮ অক্টোবর (শুক্রবার) রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের ভবনে সকাল ১১:৩০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হেলাল সহ আরো নেতাকর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনে তারা দাবি করে গত ১৬ অক্টোবর দুপুর আনুমানিক ১২:৩০ মিনিটে জেলা প্রশাসন মহোদয়ের নিকট স্মারকলিপি জমা দিতে গেলে আওয়ামী লীগের কিছু সন্ত্রাসীরা তাদের উপরে হামলা চালায়। এ বিষয়ে তারা রাজপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ৯ আগষ্ট রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের বিএনপি নেতাকর্মীরা এবং বাস মালিক শ্রমিক কর্মকর্তারা একত্রে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের ভবনে হামলা চালিয়ে, ভয় ভীতি দেখিয়ে ভবনটি দখলে নেয় তারা। ঘটনার সেইদিন সংবাদ সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা গেলে দুই জন সাংবাদিকের উপরে হামলা ও ক্যামেরা ভাঙচুর করে। সেই সংবাদটি বিভিন্ন অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে প্রকাশ হয়েছিল। এরপর কে বসবে কোন চেয়ারে, কিভাবে বাস মালিকদের কাছে চাঁদা নেওয়া হবে, কার থেকে কত টাকা, কোন বাস মালিকদের সুযোগ সুবিধা দিবে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে তারা দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পরে। একপক্ষ চাই চেয়ার ধরে রাখতে আরেক পক্ষ চাইছে এখন নির্বাচন করে যাকে বাস মালিক ও শ্রমিকরা বেছে নিবে তারাই থাকবে চেয়ারে।
এ বিষয়ে গৌতম মোহন চৌধুরী রাকেশ জানায়, গত ১৬ তারিখে রাজশাহী কোটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন শেষ করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচি করতে যায়। সেখানে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হেলালসহ, বিএনপি কর্মী, আওয়ামী লীগ কর্মী, বাস মালিক শ্রমিক ও বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের মানববন্ধন বন্ধ করে। নির্বাচনের দাবিতে আমরা শান্তি মূলক ভাবে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করছিলাম সেখানে তারা এসে আমাদের উপর হামলা করে এবং ব্যানার ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করাই দুই পক্ষের হাতাহাতি শুরু হয়। তাৎক্ষণিক সেখানে রাজপাড়া থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয় ও রাজপাড়া থানার ওসি কে অভিযোগ দিলে তারা আমাদের বলেন, মামলায় না যেয়ে দুই পক্ষ বসে সমাধান করেন। কিন্তু আমাদের উপর হামলা করে উল্টো আমাদের নামেই তারা রাজপাড়া থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিভিন্ন অনলাইন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে ভিডিও সংবাদ প্রকাশ হয়। আমাদের শান্তি পূর্ণ কর্মসূচিতে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হেলালসহ তার ভাড়া করা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীরা আমাদের উপর হামলা করে। যেখানে সিসি ক্যামেরার ফুটেছে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কারা হামলা করেছিল।
এ বিষয়ে রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, সড়ক পরিবহন গ্রুপের ২ পক্ষরই একই অভিযোগ। একপক্ষ থানায় এসে অভিযোগ করেছেন আরেকপক্ষ তারা অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে অবস্যই মামলা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হেলাল কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।