স্টাফ রিপোর্টার :
স্ত্রীর ভারতীয় শাড়ি রাস্তায় ছুড়ে ফেলে পুড়িয়ে দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। প্রতিবেশী দেশ ভারতে বাংলাদেশের পতাকা অবমাননা এবং আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে এ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাধারণ চিকিৎসক সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত ভারতীয় পণ্য বর্জন কর্মসূচিতে তিনি এ কাজ করেন। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা তার সঙ্গে ছিলেন।
এসময় তিনি বলেন, আমাদের ঐক্য ইস্পাতের মতো কঠিন। এই ঐক্য কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা ওদের (ভারত) দেশের স্বাধীনতা ও পতাকাকে আমরা সম্মান করবো। তারা যদিও আমাদের পতাকাকে অসম্মান করেছে। কিন্তু, আমরা ওদের পণ্য বর্জন করবো।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ভারতের আগরতলায় কিছু উগ্রবাদী মানুষ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে আমাদের কর্মচারীদেরকে আঘাত করেছে। আমাদের জাতীয় পতাকার যে খুঁটি রয়েছে সেটি ভেঙে আমাদের পতাকাকে তারা ছিঁড়েছে। কলকাতায় যে হাইকমিশন রয়েছে সেখানে গিয়ে তারা আজেবাজে বলেছে। তোমরা আমাদেরকে পছন্দ করো না, তারপরও তোমাদের জিনিস কিনতে হবে? বাংলাদেশের মানুষ তো মাথা নত করার মানুষ নয়। আমরা একবেলা খেয়ে থাকবো, তারপরও আমরা মাথা নত করবো না।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘আপনাদের (ভারত) কিসের এত অহংকার। কেন আপনারা পদানত করে রাখতে চান? আপনারা নাকি পেঁয়াজ, আদা না দিলে আমরা খেতে পারবো না। আপনাদের আদা, পেঁয়াজ আমাদের দরকার নাই। আমাদের বান্দরবনে ও পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচুর আদা হয়। আমাদের নীলফামারিতে প্রচুর আদা হয়। আমরা আদার চাষ বাড়িয়ে দিবো। আপনাদের উপর আমরা মুখাপেক্ষী থাকবো, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। আপনারা আমাদেরকে একটু দেবেন, আর যা বলবেন তা শুনতে হবে ঐটা হাসিনার মতো দু’একজন লোক থাকতে পারে। কিন্তু, কোটি কোটি বাংলাদেশের মানুষ এটা মানবে না।’
‘ভারতের অনেক সাংবাদিক এবং অনেক নেতা বলেছে তাদের ঐখান থেকে নাকি ডাক্তার না আসলে আমাদের চিকিৎসা হয় না’ এমন কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আপনারা কি আমাদেরকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেন! আপনারা কি বিনা টাকায় এক কাপ চা খাওয়ান! এরকম নজির তো আপনাদের নেই। আমাদের দেশের লোক ঐখানে গিয়ে ডলার খরচ করে। এখন কলকাতার নিউমার্কেট বন্ধ, দোকান পাট বন্ধ। সেখানে আর কোনো ক্রেতা নেই। আমাদের ডলারে এগুলো কেনা হতো।’
বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আমি আমার দেশের মানুষকে বলেবো, ওরা (ভারত) যে বাংলাদেশের মর্যাদাকে লুন্ঠিত করার চেষ্টা করেছে, ওরা (ভারত) যে বাংলাদেশের পতাকা পুড়িয়েছে কিন্তু আমরা ভারতের পতাকাকে লাঞ্ছিত করবো না। আমরা আরেকটি স্বাধীন দেশের মর্যাদাকে ছোট করবো না। প্রত্যেক জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে আমরা সম্মান করবো। আমরা ওদের (ভারত) মতো ছোটলোকি করবো না।’
রিজভী বলেন, ‘গতকাল প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বসেছেন। জাতির সংকটকালে আমরা এভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল আগ্রাসন ঠেকাবো। যারা আমাদেরকে অপছন্দ করে, যারা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি; যে ব্যক্তি বাংলাদেশের মানুষের উপর অত্যাচার, নিপীড়ন করেছে, ছাত্র জনতার রক্তে রাজপথ লাল করেছে সেই নিষ্ঠুর হাসিনাকে তারা (ভারত) পছন্দ করে। বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না। বাংলাদেশ টিকে থাকুক এটা চায় না। আজকে তারা (ভারত) বাংলাদেশে নানা ধরনের উষ্কানি দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের উস্কানিতে কান দেয়নি। ছোট্ট যে দু’একটি গোষ্ঠী উষ্কানিতে পা দিয়েছে, তারা চিহ্নিত হয়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ যে আমাদের এখানে উস্কানি দিতে পারে এটা গোটা জাতি ধরে ফেলেছে।’
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু,সহ-সাংগঠনিক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম,ছাত্রদল নেতা ডা.আব্দুল আউয়াল প্রমুখ।